জন গণ মণ ‘ ভারতের জাতীয় সঙ্গীত কবে , কেন এবং কে
Contents
গেয়েছিলেন । জানুন এর পেছনের সম্পূর্ণ ইতিহাস ।
জাতীয় সঙ্গীত কোন একটি দেশের পরিচয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । ‘জন গণ মণ ‘
আমাদের ভারতের জাতীয় সঙ্গীত । কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন গণ মণ গান টির রচনা
করেছিলেন । ১৯১১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গান টি প্রথম গেয়েছিলেন কিন্তু ২৪ শে
জানুয়ারী ১৯৫০ সালে ভারতের সংবিধান সভা দ্বারা ‘জন গণ মন’ এর হিন্দি সংস্করণ টি কে
ভারতের জাতীয় সঙ্গীত রুপে স্বীকার করা হয় । যদিও এই গান টি সর্বপ্রথম বাংলা ভাষাতেই
রচনা করেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । এই গান টি ৫২ সেকেন্ড এর সময় নিয়ে গাওয়া হয় । গনতন্ত্র দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সমস্ত স্কুল , কলেজ, সরকারী কার্যালয় এমনকি সমস্ত পাড়াতেও এই গান বাজানো হয় । এছাড়াও আমরা দেখে থাকি আমদের দেশের ক্রিকেট , ফুটবল , হকি এর খেলোয়াড় রা খেলার পূর্বেও এই গান গেয়ে থাকেন ।
‘Jana gana mana lyrics in bengali’ -‘ জন গণ মন গান এর লাইন ‘
১. জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা!
পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মরাঠা দ্রাবিড় উত্কল বঙ্গ
বিন্ধ্য হিমাচল যমুনা গঙ্গা উচ্ছলজলধিতরঙ্গ
তব শুভ নামে জাগে, তব শুভ আশিস মাগে,
গাহে তব জয়গাথা।
জনগণমঙ্গলদায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা!
জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয়, জয় হে॥
২. অহরহ তব আহ্বান প্রচারিত, শুনি তব উদার বাণী
হিন্দু বৌদ্ধ শিখ জৈন পারসিক মুসলমান খৃস্টানী
পূরব পশ্চিম আসে তব সিংহাসন-পাশে
প্রেমহার হয় গাঁথা।
জনগণ-ঐক্য-বিধায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা!
জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয়, জয় হে॥
৩. পতন-অভ্যুদয়-বন্ধুর পন্থা, যুগ-যুগ ধাবিত যাত্রী।
হে চিরসারথি, তব রথচক্রে মুখরিত পথ দিনরাত্রি।
দারুণ বিপ্লব-মাঝে তব শঙ্খধ্বনি বাজে
সঙ্কটদুঃখত্রাতা।
জনগণপথপরিচায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা!
জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয় জয় হে॥
৪. ঘোরতিমিরঘন নিবিড় নিশীথে পীড়িত মূর্ছিত দেশে
জাগ্রত ছিল তব অবিচল মঙ্গল নতনয়নে অনিমেষে।
দুঃস্বপ্নে আতঙ্কে রক্ষা করিলে অঙ্কে
স্নেহময়ী তুমি মাতা।
জনগণদুঃখত্রায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা!
জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয় জয় হে॥
৫. রাত্রি প্রভাতিল, উদিল রবিচ্ছবি পূর্ব-উদয়গিরিভালে—
গাহে বিহঙ্গম, পুণ্য সমীরণ নবজীবনরস ঢালে।
তব করুণারুণরাগে নিদ্রিত ভারত জাগে
তব চরণে নত মাথা।
জয় জয় জয় হে, জয় রাজেশ্বর ভারতভাগ্যবিধাতা!
জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয় জয় হে॥
1. Jano Gano Mano Adhinayaka
Jaya Hey Bharata Bhagya Bidhata,
Panjabo Sindhu Gujarato Maratha
Drabiro Utkala Bango
Bindhyo Himachalo Jamuna Ganga
Uchhalo Jalodhi Tarango
Tabo Subho Namay Jagay
Tabo Subho Ashiso Magay
Gahay Tabo Jayagatha.
Jano Gano Mangala Daayaka
Jaya Hey Bharata Bhagya Bidhata
Jaya Hey, Jaya Hey, Jaya Hey,
Jaya Jaya Jaya Jaya Hey
2. Aharaha Tabo Awhbano Pracharito
Shuni Tabo Udaro Bani
Hindu Bauddho Sikho Jaino
Parasiko Musalmano Khristani
Puraba Pashchimo Aashay
Tabo Singhasano Pashay
Premoharo Hawye Gantha
Jano Gano Oikya Bidhyaka
Jaya Hey Bharata Bhagya Bidhata
Jaya Hey, Jaya Hey, Jaya Hey,
Jaya Jaya Jaya, Jaya Hey
3. Patana Abhyudaya Bandhuro Pantha
Jugo Jugo Dhabito Jatri
He Chiro Sarathi, Tabo Ratha Chakre
Mukharito Patha Dino Ratri
Daruna Biplaba Majhay
Tabo Shankha Dhwani Bajay
Sankata Dukho Trata
Jano Gano Patha Parichyaka
Jaya Hey Bharata Bhagya Bidhata
Jaya Hey, Jaya Hey, Jaya Hey,
Jaya Jaya Jaya, Jaya Hey
4. Ghoro Timiro Ghono Nibiro
Nishithay Pirito Murchhito Deshay
Jagrata Chhilo Tabo Abichalo Mangalo
Nato Nayanay Animeshay
Duhswapnay Atankay
Rakkha Karilay Ankay
Snehamayee Tumi Mata
Jano Gano Dukho Trayaka
Jaya Hey Bharata Bhagya Bidhata
Jaya Hey, Jaya Hey, Jaya Hey,
Jaya Jaya Jaya, Jaya Hey
5. Ratri Prabhatilo Udilo Rabichhabi
Purbo Udaya Giri Bhalay
Gahay Bihangamo Punyo Samirano
Nabo Jibana Rasa Dhalay
Tabo Karunaruno Ragay
Nidrito Bharata Jagay
Jaya Jaya Jaya Hey, Jaya Rajeswara
Bharata Bhagya Bidhata
Jaya Hey, Jaya Hey, Jaya Hey,
Jaya Jaya Jaya, Jaya Hey
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পাঁচ টি অংশে এই পুরো কবিতা টি কে লিখেছিলেন কিন্তু শুধুমাত্র প্রথম অংশ কেই জাতীয় সঙ্গীত এর অগ্রাধিকার দেওয়া হয় ।
আপনার জানেন যে ১৯১১ সাল পর্যন্ত বাংলা ভারতবর্ষের রাজধানী ছিল কিন্তু ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন বাংলা কে ভারতের রাজধানী রুপে ছিনিয়ে নেয় । বাংলার তৎকালীন গর্ভনর লর্ড কার্জন বাংলার থেকে রাজধানী ছিনিয়ে নিয়ে দিল্লি তে স্থানান্তরিত করেন ১৯১১ সালে । বাংলার জনতা এতে খুব এই ক্ষুব্ধ হয় এবং সমবেত জনতা ‘জন গন মন আধিনায়াক ও জয় হে’ এই স্লোগান দিতে থাকেন । পরবর্তী কালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই স্লোগান টি কেই কবিতা রুপে অনুবাদ করেন ।
এই গান টি প্রথমবার কবে ও কোথায় গাওয়া হয়েছিল ?
১৯১১ সালের ২৬ শে ডিসেম্বর কংগ্রেস এর বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । এই দিন
বঙ্কিমচন্দ্র এর লেখা বন্দেমাতরাম গানটি গাওয়া হয় , এবং এই গানটি এর পূর্বের আধিবেশন
গুলিতেও গাওয়া হত । কিন্তু ২৭ সে ডিসেম্বর ১৯১১ অর্থাৎ কংগ্রেস অধিবেশন এর দ্বিতীয়
দিনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর ভাইজি সরলাদেবী চৌধুরানি এবং তার কয়েকজন স্কুল এর বান্ধবি
মিলে প্রথমবার ‘জন গণ মন’ গানটি গেয়েছিলেন ।
Jana gana mana লেখার পেছনে মূল কারন কি ছিল ?
১৯১১ সালে যখন বাংলা থেকে ভারত বর্ষের রাজধানী দিল্লী তে স্থানানত্বরিত হয় সেই সময়
এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল এবং সেই অনুষ্ঠানে ইংল্যান্ড এর রাজা জর্জ পঞ্চম
কে আমন্ত্রিত করা হয়েছিল । জর্জ পঞ্চম কে স্বাগত জানাতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘জন গণ
মন’ গান টি গেয়েছিলেন । এটা বলা হয় যে রবীন্দ্র নাথঠাকুর কে একটি গান লিখতে বলা
হয়েছিল তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গান টি গেয়েছিলেন কারন সেই সময় তার পরিবার এর
অনেক লোক এই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তে চাকুরী করতেন ।
জন গণ মন গান এর পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
* আমরা জন গণ মন সঙ্গীত কে যে সূরে গায় সেটা অন্ধ্রপ্রদেশ এর একটি ছোট্ট গ্রাম মদনপিল্ল তে সুরবদ্ধ করা হয়েছিল ।
* এই গান টির মূল অংশ পাঁচটি পঙক্তি তে বিভক্ত । কিন্তু শুধুমাত্র প্রথম পঙ্কতি কেই জাতীয় সঙ্গীত এ নেওয়া হয় ।
* আমার সোনার বাংলা যেটা বাংলাদেশের রাষ্ট্রগান সেটাও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গেয়েছিলেন । তিনি এই বিশ্বের একমাত্র যিনি দুটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছেন ।
* জাতীয় সঙ্গীত এর বাংলা থেকে বাংলা থেকে হিন্দি তে অনুবাদ সুভাষ চন্দ্র বসু করিয়েছিলেন । এর হিন্দিতে অনুবাদ করেছিলেন ক্যাপ্টেন আবিদ আলি ।
* বিখ্যাত কবি জেমস কাজিন এর পত্নি মারগ্রেট এর জন গণ মণ এর অনুবাদ ইংরাজি তে অনুবাদ করেছিলেন